এমন
কিছু খাবার রয়েছে যা দুধের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে উদ্দীপনা সৃষ্টি করতে পারে।
এখানে
বুকে দুধের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে পারে এমন কিছু খাবার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। ১)গরম দুধ এবং জিরা পান করুনঃ এক
গ্লাস গরম দুধের সাথে এক চা চামচ জিরা গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। এবার এটি প্রতিদিন রাতে
ঘুমাতে যাওয়ার আগে পান করুন। এটি বুকের দুধ বৃদ্ধি করার সাথে সাথে শরীরে আয়রনের
ঘাটতি দূর করে থাকে।
২)প্রচুর পরিমাণে পানি পানঃ বুকের
দুধ বৃদ্ধি করার সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকরী উপায় হল শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা। আর
এইজন্য প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা। প্রতিদিন ৮ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান
করুন। এটি প্রাকৃতিকভাবে বুকের দুধ বৃদ্ধি করবে।
৩)কালোজিরাঃ যেসব
মায়েদের বুকে পর্যাপ্ত দুধ নেই, তাদের মহৌষধ কালোজিরা। মায়েরা প্রতি রাতে শোয়ার
আগে ৫-১০ গ্রাম কালোজিরা মিহি করে দুধের সাথে খেতে হবে। মাত্র ১০-১৫ দিনে দুধের
প্রবাহ বেড়ে যাবে। এছাড়া এ সমস্যা সমাধানে কালোজিরা ভর্তা করে ভাতের সাথে খেলেও
ভাল ফল পাবে।
৪)মেথিঃ মেথি
মায়ের দুধ বৃদ্ধি করতে বেশ কার্যকর। সারারাত মেথি এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।
পরের দিন সকালে তা পান করুন। এর ভিটামিন, মিনারেল, আয়রন এবং ক্যালসিয়াম রয়েছে যা
মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করে।
৫)রসুনঃ প্রতিদিন
সকালে খালি পেটে ৩ কোয়া রসুন খেতে পারেন। এটিও আপনার বুকের দুধ বৃদ্ধি করতে
সাহায্য করবে। কাঁচা রসুন খেতে না পারলে রান্নায় রসুন ব্যবহার করুন। এছাড়া এক কাপ
পানিতে ৩ কোয়া রসুন দিয়ে সিদ্ধ করতে দিন। পানি কমে অর্ধেক হয়ে আসলে এতে এক কাপ দুধ
দিয়ে দিন। ফুটে উঠলে চুলা নিভিয়ে দিন। স্বাদ বৃদ্ধির জন্য মধু মিশাতে পারেন। এটি
প্রতিদিন সকালে পান করুন।
৬)গরম দুধ এবং দারুচিনিঃ এক
গ্লাস গরম দুধের সাথে এক চা চামচ দারুচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। স্বাদ বৃদ্ধির জন্য
এতে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। এটি প্রতিদিন পান করুন। এটি আপনার বুকের
দুধ বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
৭)লাউঃ লাউতে
রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল যা দুধ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি পেট ঠান্ডা করে
অ্যাসিডিটি কমিয়ে দেয়। খাবারে নিয়মিত লাউ রাখুন।
৮)দুধ খাওয়ানোর সময় নির্দিষ্ট করুনঃ দুধ
খাওয়ানোর সময় নির্দিষ্ট করবেন না। যখন দুধ পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকবে তখনই বাচ্চাকে
দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। চেষ্টা করুন দুধ খাওয়ানোর জন্য উভয় স্তন ব্যবহার করতে।
এতে দুই স্তনে দুধ বৃদ্ধি পাবে।
৯)তুলসিঃ তুলসিতে
রয়েছে ভিটামিন কে যা মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করার সাথে সাথে তার মান উন্নত করে।
এটি মায়ের খাওয়ার রুচি বৃদ্ধি এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে থাকে। চা বা স্যুপের সাথে
তুলসি পাতা খেতে পারেন।
১০)খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনঃ
প্রতিদিনের
খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনুন। সবুজ শাক-সবজি, ডিম, দুধ, রসুন, আঙুরের রস, ফলের রস,
মুরগির মাংস প্রতিদিন খাওয়ার চেষ্টা করুন। এসব খাবার বুকের দুধ বৃদ্ধিতে সাহায্যে
করে থাকে। এছাড়া
বাচ্চা যত বেশি দুধ টানবে তত বেশি হরমোন নির্গত হবে এবং তত বেশি দুধ উৎপাদিত হবে।
তাই বুকের দুধ তৈরির একমাত্র উদ্দীপনা হলো শিশুর বুকের দুধ টানা। শিশু বুকের দুধ
পাচ্ছে না বলে তাকে ফর্মুলা খাবার দেওয়া যাবে না। এতে মায়ের দুধ আরও কমে যাবে এবং
শিশুর বুকের দুধ টানার অভ্যাস ও চলে যাবে।
আর কোনো অবস্থায় শিশুর মুখে বোতল বা চুষনী
দেওয়া উচিত নয়। এর ফলে শিশু তার মায়ের স্তনের বোঁটা মুখে নিতে চাইবে না। শিশুকে
বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খাওয়া উচিত নয়। এতে বুকের দুধ কমে যেতে
পারে। তাই এ সময় অন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
0 মন্তব্যসমূহ