আজকের দিনে কম বেশি সবাই চুলের সমস্যায় ভুগে থাকেন। অসময়ে চুলপড়ে যাওয়া,ঘন চুল পাতলা হতে থাকা এই সমস্যায় অনেকোই ভোগেন আজকাল। আর এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কত কিছুই না করে থাকেন সবাই। আসুন জেনে নিই সহজ কিছু উপায় কিভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
চুল পড়ার কারণ :
প্রথমে
জেনে নেওয়া যাক কি কি কারনে চুল পড়ে বা মাথার চুল কমতে থাকে অসময়ে।
১)অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন যেমন টেস্টোস্টেরন, অ্যান্ড্রোস্ট্রেনডিয়ন, ডিএইচটি
হরমোনগুলো সাধারণত পুরুষের বেশি ও মহিলাদের কম পরিমাণে থাকে। এ হরমোনগুলো হেয়ার
ফলিকলের ওপর কাজ করে ও চুল পড়া ত্বরান্বিত করে। সে কারণে পুরুষের চুল বেশি পড়ে।
২)দুশ্চিন্তায় ভুগলে বা মানসিক সমস্যা থাকলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি করে চুল পড়তে
পারে। তবে এ চুলপড়া সাময়িক এবং পুনরায় চুল গজায়। কিন্তু দীর্ঘদিন মানসিক
দুশ্চিন্তায় থাকলে এবং দুশ্চিন্তা কাটিয়ে উঠতে না পারলে অনেক বেশি চুল পড়ে যেতে
পারে।
৩)চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন না হলে, অ্যানিমিয়া থাকলে চুল পড়া শুরু হতে পারে।
৪)বংশগত সমস্যার কারণে পড়ে যেতে পারে আপনার মাথার চুল। হয়তো আপনার দাদা-বাবা-চাচার
কিংবা নানা-মামার কারো টাক নেই। কিন্তু আপনার বাবা বা মায়ের মামা-চাচার টাক থাকায়
বংশগত কারণে আপনারও টাক পড়তে পারে।
৫)রোগের প্রকোপে মাথার চুল পড়তে পারে। যেমন, অনেকে টাইফয়েড জ্বরে চুল হারিয়েছেন বলে
জানা যায়।
৬)মাথায় খুশকি ও স্ক্যাল্পের রোগে মাথার চুল পড়তে পারে।
৭)অনেক সময় ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়ও মাথার চুল পড়ে যেতে পারে।
চুল পড়ার করণীয় কী কী:
আপনার চুলের বৃদ্ধি এবং গজানোর জন্য কি কি করনীয় আসুন জেনে নেওয়া যাক।
যে কারণেই চুল পড়ুক না কেন, চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে।এ ছাড়াও যে যে বিষয়গুলোর প্রতি আপনার দৃষ্টি দেয়া জরুরি,সেগুলো হলো:
সুষম খাদ্য গ্রহণ: প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় থাকা চাই প্রচুর শাক-সবজি ও
মৌসুমী ফল আর আমিষের মধ্যে দুধ, ডিম, মাছ তো থাকছেই। পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন
সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন-আমাদের চুল মূলত কেরাটিন দিয়ে গঠিত।এটি অ্যামিনো এসিড
দিয়ে তৈরি এক ধরণের প্রোটিন। তাই নতুন চুল গজানোর জন্যে অবশ্যই আপনার শরীরকে
পর্যাপ্ত অ্যামিনো এসিড সরবরাহ করতে হবে। মাছ, মাংস, পনির, দুধ, ডিম - আপনার খাদ্য
তালিকায় প্রতিদিনই এগুলোর অন্তত একটি রাখার চেষ্টা করুন। সয়াবিন, মটরশুঁটি, কলা,
বাদাম ইত্যাদি থেকেও পেতে পারেন। তবে নন-ভেজিটেরিয়ান খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ
তুলনামূলক বেশি।আয়রন আর জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার আপনার মাথার কোষে অক্সিজেন পরিবহন
করে, নতুন টিস্যু তৈরিতে এবং ক্ষয়রোধে সহায়তা করবে। মটরশুঁটি, বাদাম, কলিজা,
মাংস, দুধে আপনার প্রয়োজনীয় জিংক আর আয়রন বিদ্যমান। ভিটামিন সি যুক্ত ফলমূল
খান।
পরিমিত ঘুম: ঘুম ঠিক মতো না হলে শরীর সুস্থ রাখা সম্ভব নয়। তাই ঘুম হতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণের। এছাড়া চুল পড়া রোধে মেডিটেশনও করা যেতে পারে।সপ্তাহে অন্তত তিন দিন চুল ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। প্রয়োজনে শ্যাম্পু করতে পারেন। তবে শ্যাম্পু করার আগে অবশ্যই তেল দিয়ে এক ঘণ্টা রাখতে হবে। নাহলে চুল রুক্ষ হয়ে যাবে।
0 মন্তব্যসমূহ